অপরাধআইন ও বিচারজেলা সংবাদবরিশালসারাদেশ

ভরা মৌসুমে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে জেলেরা

ঘূর্ণিঝড় গেছে দুই দিনও হয় নাই, এর মধ্যেই আবার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এভাবে চললে তো আমাদের পেটে ভাত জুটবেনা মরতে হবে না খেয়ে। এমন অবস্থা হইছে পোলাপান (ছেলে সন্তান) নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। চোখমুখে হতাশার ছাপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন খোকা মাঝি।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি, এই ঋণ কিভাবে শোধ করবো। এনজিওর অফিসাররা বাড়ি এসে বসে থাকে কিস্তি নেওয়ার জন্য। মাছ ধরতে না পারলে খাবো কি আর কিভাবে কিস্তি দেবো। শুধু খোকা মাঝি না, এমন শত শত জেলে আছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া, চরমোন্তাজ, মৌডুবি ও চালিতাবুনিয়া।

শুক্রবার মধ্যরাত (২০ মে) থেকে ৬৫ দিনের জন্য সমুদ্রে সকল ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কর্মহীন এ সময়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন মৎস্যজীবীরা।

হালনাগাদ তালিকা না থাকায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা পাচ্ছেনা অধিকাংশ জেলে। বিকল্প কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণ করে ভরা মৌসুমে জেলেদের মৎস্য আহরণের সুযোগ করে দেওয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।

কথা হয় কোড়ালিয়ার জেলে মান্নানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আমরা মেনে চলি ঠিকই, কিন্তু ভারত তো মাছ ধরে। এই সময়টা মাছ ধরার মৌসুম আর আমাদের এই সময় নিষেধাজ্ঞা। আমরা যে এখন কি করবো আর কেমনে বাঁচবো সেই চিন্তা করছি।

আরেক জেলে রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা যারা প্রকৃত জেলে তারা চাল পাই না। চাল পায় যারা জেলে না তারা, এই নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের যেনো ঠিকভাবে চাল দেয়।

রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ৮৬ কেজি চাল বিতারণ করা হবে। এবং অনিবন্ধিত জেলেদের নিবন্ধনের আওতায় আনার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

রাঙ্গাবালী উপজেলায় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১২ হাজার ৮২০ জন। এছাড়া আরও প্রায় ৫ হাজার সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে অনিবন্ধিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button