রংপুর

পঞ্চগড়ে রাস্তার পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান জন্মদান

পঞ্চগড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী রাস্তা পাশে খোলা স্থানে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে।

রবিবার(২২-জানুয়ারি) দুপুর আনুমানিক দুইটার সময় পঞ্চগড় জেলা জর্জ কোর্ট গেটের সামান্য দক্ষিনে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া হাইওয়ে সড়কের পাশে এই সন্তান জন্মদানের ঘটনা ঘটে।

 

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, খোলা স্থানে সন্তান প্রসব করার পর স্থানীয়রা নবাগত সন্তানের নারী কাটার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এবং মানসিক ভারসাম্যহীন মা খোলা স্থানে রক্তাক্ত অবস্থায় বসে থেকে। স্থানীয় মানবিক কিছু মানুষ মায়ের জন্য কম্বল ও পায়জামা এনে ঢেকে দিয়েছে।

 

পড়ে বিষয়টি পঞ্চগড়ের মানবিক জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম’কে মুঠোফোনে অবগত করলে তিনি তাৎখনিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। দ্রুত সদর থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সদস্য, অ্যাম্বুলেন্স, মেডিকেল কর্মী, জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী সচিব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ভারসাম্যহীন মায়ের সুচিকিত্সার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মা ও মেয়ের শারীরিক অবস্থার সব ধরনের খোঁজ খবর নেন।

 

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ ফজলে রাব্বী বলেন, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে এখন পর্যন্ত মা ও মেয়ে দুজনেই সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। আমি দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য বসেছি। এমন সময় খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আমরা মানুষের সেবক। যে অবস্থাতেই থাকিনা কেন মানুষের প্রয়োজনে এগিয়ে যাওয়াটাই আমাদের পেশা। আমারা এখানে এসে মহিলার পরিচয় জানতে পারি। তার পরিবার আছে। এবং পরিবারে আরো সদস্য আছে। ইতিমধ্যে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মাহানপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় তাকে ঘর দেওয়া হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সে রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।

 

এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের এসআই ভবেশ চন্দ্র বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মা ও নবজাতক সন্তানকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মা ও মেয়ে দুজনেই সুস্থ রয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি মহিলার নাম রনজিনা বেগম(৪০),গ্রাম লাঠুয়াপাড়া, ইউনিয়ন থাক্কামারা, থানা জেলা পঞ্চগড়। তার স্বামীর বাড়ি আমতলা এবং স্বামীর নাম খতিব। তার স্বামীও অসুস্থ। সে মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে না থেকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের সেবা প্রদানে প্রশাসনের তৎপরতা দেখে মুগ্ধ পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষ। তারা বলেন একজন অসহায় মানুষের সেবার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা যেভাবে ছুটে এসেছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয় ও মহান। আমরা মা ও মেয়ের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। এ সময় উপস্থিত সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button